স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটের প্রাকৃতিক পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর লুটকাণ্ডের আরেক হোতা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও তেলিখাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল অদুদ ওরফে আলফু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল। সাদাপাথর লুটের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তালিকার ২৬ নম্বরে তার নাম রয়েছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা। এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আলফুর বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ ১৭টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, আলফু মিয়ার বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের আগে ও পরে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৫ আগস্টের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে দুটি মামলা রয়েছে। এসব মামলা সত্ত্বেও আলফু মিয়া স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের দাপটে চলাচল করতেন। সাদাপাথর লুটের প্রেক্ষাপট হিসেবে ধরা হয়, সাদাপাথরমুখী ধলাই নদ থেকে বালু উত্তোলন। আলফু মিয়া তার একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দিয়ে ভোলাগঞ্জ বালুমহাল ইজারা নিয়ে ধলাই নদের সাদাপাথরের মুখ অনেকটা দখল করে রাখেন। এ নিয়ে ধলাই নদ এলাকায় এলাকবাসী প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালন করেন। কিন্তু আলফু ইউপি চেয়ারম্যানের দাপটে যত্রতত্র বালু উত্তোলন শুরু করলে সাদাপাথর পর্যটন এলাকায়ও লুটপাট শুরু হয়।
আরও জানা গেছে, আলফু মিয়া রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে একচেটিয়াভাবে বালু ও পাথরের অবৈধ উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ করতেন। ৫ আগস্টের পর বিএনপির একটি অংশকে নিয়ে নতুন একটি চক্র ভোলাগঞ্জে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল।
সাদাপাথর লুটকাণ্ডের আগে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ও দুদকের তালিকায় থাকা বিএনপির পদ হারানো নেতা সাহাব উদ্দিনের সঙ্গেও আলফু মিয়ার যোগসাজশ ছিল বলে জানা গেছে।
সাহাব উদ্দিনকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট নগরীর কুমারপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৯)। পরে ওই রাতেই তাকে সিলেট কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে আলোচিত সাদা পাথর লুট ছাড়াও সাতটি মামলা রয়েছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএনপি কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে ১১ আগস্ট এক বিজ্ঞপ্তিতে সাহাব উদ্দিনের বিএনপির সব পদ স্থগিত করা হয়।
Leave a Reply